এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::
চকরিয়া উপজেলার পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের কদ্দাছড়া খালের ওপর অবশেষে নির্মিত হচ্ছে এক কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে একশত মিটার আয়তনের আধুনিকমানের একটি স্বপ্নের সেতু। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বিগত ৪৬বছর যাবত ইউনিয়নের উপকুলীয় অঞ্চলের হাজারো মানুষের চলাচলের একমাত্র ব্যবস্থা ছিল বাঁেশর সাঁেকাতে। বছরে মাস চলাচল করার কারনে অনেক সময় বাঁেশর সাঁেকা নড়েবড়ে হতো। আবার বৃষ্টিতে ভিজে ও রোধে শুকিয়ে সময়ে সময়ে মাঝপথে ভেঙ্গে যেত বাঁেশর এই সাকোঁ। তারপরও শত কষ্টের মাঝেও জীবনের চলাচল করতো সুবিধা বঞ্চিত জনপদের মানুষ গুলো।
স্থানীয় জনগনের অভিযোগ, যাতায়াত ব্যবস্থা নাজুক হওয়ার কারনে ইউনিয়নের এক, দুই ও তিন নম্বর ওয়ার্ডের হাজারো পরিবারের নতুন প্রজন্ম শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হয়েছে বছরের পর বছর ধরে। অনেকে লেখাপড়ার মাধ্যমে আগামী ভবিষ্যত রঙ্গিন করতে কষ্ট হলেও প্রায় সময় ঝুঁিক নিয়ে বাঁেশর সাঁেকা অতিক্রম করে যেত পার্শবর্তী এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
স্থানীয়দের দাবি, যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত হওয়ার কারনে এতদাঞ্চলের শিশু-কিশোর-কিশোরীরা সঠিকভাবে লেখাপড়া করতে পারেনি। ফলে এখনো লেখাপড়ায় অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে এ জনপদের মানুষ। তবে জীবন চলার পথে পাওয়া না পাওয়া এসব ধন্যদশায় নিমজ্জিত জনপদের মানুষকে আলোর পথ দেখাতে এবার এগিয়ে এসেছেন তরুন জননেতা খলিল উল্লাহ চৌধুরী। যিনি ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়েছেন।
জীবনের প্রথম নির্বাচনে বিপুল সমর্থন পেলেও অল্প ভোটের ব্যবধানে তিনি বিজীত হন। তারপরও থেকে থাকেনি জনপদের প্রিয়মুখ খলিল উল্লাহ চৌধুরী। সময় পেলেই ছুটে যান ইউনিয়নের প্রতিটি জনপদের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের কল্যানে কিছু করার। সর্বশেষে তার প্রচেষ্ঠা অবশেষে সফলও হয়েছে। জনগনের দুর্ভোগের বিষয়টি তিনি চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলমকে বুঝাতে পেরেছেন। এরপর ঘটনাস্থলে পরির্দশন করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান।
জানা গেছে, পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের এক, দুই ও তিন নম্বর ওয়ার্ডের জনগনের চলাচলের দুর্ভোগের বিষয়টি আমলে নিয়ে চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তর (পিআইও) বিভাগের অর্থায়নে এক কোটি ১২ লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে কদ্দাছড়া খালের ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে একটি আধুনিকমানের সেতু। আগামী বছর জুন মাসের আগে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তরের সহকারি কর্মকর্তা বাবুল চৌধুরী।
জানতে চাইলে তরুন জননেতা খলিল উল্লাহ চৌধুরী বলেন, কদ্দাছড়া খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডের অন্তত সাত হাজার জনসাধারণ চলাচলে স্থায়ীভাবে দুর্ভোগমুক্ত হবে। এলাকার উৎপাদিত ফসল বাইরে বিক্রি করে ভাল দাম পাবে কৃষকরা। লেখাপড়ার পথ সুগম হবে সুবিধা বঞ্চিত জনপদের নতুন প্রজন্মের। তিনি বলেন, জনগনের দুর্ভোগের বিষয়টি আমলে নিয়ে আমি কদ্দাছড়া খালের ওপর একটি পাঁকা সেতু নির্মাণের জন্য চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ জাফর আলমকে অবহিত করি। তিনি ঘটনাস্থল পরির্দশন করে জনদুর্ভোগের বিষয়টি স্ব-চক্ষে দেখে এ জনপদের মানুষের জন্য তাৎক্ষনিক একটি সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন।
চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ জাফর আলম বলেন, উপজেলার উপকুলীয় ইউনিয়ন শাহারবিলের রামপুর ও পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের কদ্দাছড়াবাসির প্রাণের দাবি ছিল কদ্দাছড়া খালের ওপর একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণের। জনদুর্ভোগের বিষয়টি অবহিত হয়ে সরেজমিন ঘটনাস্থল পরির্দশন করে কদ্দাছড়া খালের ওপর একটি পাঁকা সেতু নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে উদ্বোধন করা হয়েছে। আশাকরি সেতুটি নির্মাণ শেষ হলে এই অঞ্চলের মানুষ গুলো চলাচলে আর দুর্ভোগ পোহাবেনা। #
পাঠকের মতামত: